গাংনীতে শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ

 তরিকুল ইসলাম    ১৯ সেপ্টেম্বার, ২০২৪ ১৯:১৮:০০নিউজটি দেখা হয়েছে মোট 91 বার

মেহেরপুরের গাংনীতে অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া তিন শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে সহকারী শিক্ষক(বাংলা) সামসুল হক (৪০) এর বিরুদ্ধে।

গত রবিবার(১৫ সেপ্টেম্বর) জোরপূর্বক ৩ ছাত্রীকে যৌন নির্ধারণ করেন বলে জানা যায়। আজ বৃহস্পতিবার বিষয়টি জানাজানি হলে উত্তেজিত জনতা স্কুলে উপস্থিত হয়। সামসুল হক গাংনী উপজেলার এইচ,এম,এইচ,ভি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও উপজেলার হিন্দা গ্রামের খাঁ পাড়ার ফাইমুদ্দিন খাঁ এর ছেলে।

যৌন-নিপীড়নের শিকার হওয়ার শিক্ষার্থীরা জানান, রবিবার সারা বাংলাদেশে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টির দিন আমরা তিনজন বান্ধবী স্কুলে ক্লাস রুমে বসে ছিলাম। আমাদের বাংলা স্যার সামসুল হক ক্লাসে এসে তিনজনের জোরপূর্বক স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। বিষয়টি সম্মানহানি হবে এমন ভয়ে বিদ্যালয়ের অভিযোগ বক্সে একটি চিরকুট লিখে জমা দেই। পরে বিষয়টি অভিভাবকদের জানাই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, সামসুল হক স্যার বিদ্যালয়ে ক্লাসের সময় এসে শিক্ষার্থীদের শরীরের বিভিন্ন অংশে হাত দেন। স্যারের চরিত্র খুবই খারাপ, আমাদেরকে প্রায় সময় খারাপ দৃষ্টিতে দেখেন।

হিন্দা গ্রামের লাল্টু হক জানান, প্রায় ১০-১২ বছর আগে একজন স্কুল শিক্ষার্থীকে কোচিং সেন্টারে যৌন নিপীড়নের দায়ে স্কুল থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয় এই শিক্ষককে। এ নিয়ে আদালতে মামলাও হয়েছিল। সামসুল হকের ভাই আব্দুল হালিম বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হওয়ায় তাকে বাঁচিয়ে নিয়ে আবার বিদ্যালয়ে চাকরি করার সুযোগ করে দিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, এমন শিক্ষক সমাজের কলঙ্ক এমন শিক্ষককে আর বিদ্যালয়ে দেখতে চাই না তার অব্যাহতির দাবিও জানান তিনি।

একই গ্রামের বকুল আলম জানান, বিভিন্ন সময় শুনতে পাওয়া যায় সামসুল মাস্টার স্কুলে পড়ো আর ছাত্রীদের কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছে। অনেকে তাদের মেয়ের সম্মানের কথা ভেবে মুখ খুলতে চায় না।

হিন্দা এইচ,এম,এইচ,ভি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি দুলাল হোসেন জানান, সামসুল হক একজন দুশ্চরিত্রের মানুষ। অপকর্ম করে দশ বছর পর সেই মামলা নিষ্পত্তি করে আবার বিদ্যালয়ে যোগদান করেন ভেবেছিলাম শুধরিয়ে যাবেন। কিন্তুু তিনি শুধরাননি।

হিন্দা এইচ,এম,এইচ,ভি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম জানান, ২০১৩ সালের ২৭ মার্চ হিন্দা গ্রামের সপ্তম শ্রেণীর পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীকে টেংরামারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোচিং চলাকালীন সময়ে যৌন হয়রানি চেষ্টা করে সামসুল হক। এ নিয়ে আদালতে একটি মামলাও হয়েছিল। দীর্ঘ ১০ বছর মামলা শেষে আবার সে বিদ্যালয়ে চাকরি করছে। যদিও সে আমার ছোট ভাই, শিক্ষার্থীদের সাথে যদি যৌন নিপীড়নের চেষ্টা করে থাকে তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে অফিশিয়ালি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অভিযুক্ত শিক্ষক সামসুল হক এর সাথে একাধিকবার মুঠোফোনের যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

গাংনী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে মোবারক জানান, যৌন-নিপীড়নের অভিযোগ পেয়ে তৎক্ষণিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ অভিভাবকদের কথা শুনেছি। প্রাথমিকভাবে কিছু সত্যতা পেয়েছি, তদন্ত-পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা জানান, যৌন নিপীড়নের খবর পেয়ে উপজেলা মাধ্যমিক অফিসারকে বিদ্যালয় পরিদর্শনে পাঠানো হয়েছে। যদি এর সাথে ওই শিক্ষক জড়িত হয়ে থাকে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তরিকুল ইসলাম