পশুর হাটের সবার নজর স্নাতক পাস সালমার দিকে!

 অনলাইন ডেস্ক    ১৫ জুন, ২০২৪ ১১:০৮:০০নিউজটি দেখা হয়েছে মোট 16 বার

কেউ ঘুরে ঘুরে গরু দেখছেন, কেউ দরদাম করছেন, কেউবা দাম চুকিয়ে গরু নিয়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছে। তবে সবার চোখ এক নারী বিক্রেতার দিকে। পরম মমতায় লালন-পালন করা গরুগুলোকে দেখাশোনা করছেন। কখনও খাওয়াচ্ছেন আবার কখনও গায়ে হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এর ফাঁকে গরুর দাম হাঁকাচ্ছেন।

শুক্রবার (১৪ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের বিবিরহাট বাজারে দেখা হয় সেই নারী বিক্রেতার সঙ্গে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের সালমা খাতুন ১৪টি গরু নিয়ে এই হাটে এসেছেন।

চাকরি হারিয়ে স্নাতক পাস সালমা বাড়ির পাশেই গড়ে তোলেন ছোট্ট খামার। গত বুধবার ১৪টি গরু নিয়ে তিনি বাড়ি থেকে দূরের বন্দরনগরে এসেছেন। এবারের কোরবানির ঈদে গরু নিয়ে আসা একমাত্র নারী বিক্রেতা। তাই তাকে ঘিরে ইতোমধ্যেই আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।

৩৪ বছর বয়সী সালমা খাতুন শোনালেন নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে নারী উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার গল্প। সালমা জানালেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ কলেজ থেকে দর্শনে স্নাতক করেছেন। এরপর ভর্তি হন রাজশাহী কলেজে। সেখান থেকে ২০১৬ সালে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। পড়াশোনার পাট চুকিয়ে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি নেন। তবে করোনাকালে এসে চাকরিটা বাঁচানো যায় নি।

আরও পড়ুন: আজ পবিত্র হজ...

তিনি বলেন, ‘চাকরি হারিয়ে হতাশ হয়ে ঘরে বসে থাকিনি। কীভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া যায়- সারাক্ষণ সেই ভাবনাই ভাবতাম। এর মধ্যে গবাদিপশুর খামার করার চিন্তা মাথায় আসে। জমানো টাকায় একটি গাভি কিনি। শুরুর দিকে দুধ বিক্রি করতাম। এরপর গাভি থেকে আরও দুটি গরু প্রস্তুত হয়। এভাবেই খামার বড় করার চিন্তা আসে।’

সালমা গরুগুলো হাটে তুলেছেন, তবে লালন-পালন করতে করতে গরুগুলোর প্রতি তার ভীষণ মায়া জন্মে গেছে। তিনি বলেন, ‘জীবনে যতবারই হতাশা এসেছে, ততবারই ঘুরে দাঁড়িয়েছি। এ খামারে গরু লালন-পালন করতে করতে হতাশায় ভুলে থাকি।’

সালমা রাত ২টা পর্যন্ত হাটে থাকছেন। এরপর বাজারের পাশের একটি বাসায় গিয়ে ঘুমান। আবার সকাল বেলায় হাটে এসে গরুর খাবার তৈরি করেন।

নারী উদ্যোক্তা সালমাকে বাজারের অন্য ব্যাপারীরাও সহযোগিতা করছেন। এ কারণে তিনি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

অনলাইন ডেস্ক