পাগলী ও সদ্যজাত সন্তানকে নিয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় মহাসীন আলী

 তরিকুল ইসলাম    ৬ নভেম্বার, ২০২৩ ১৮:২৬:০০নিউজটি দেখা হয়েছে মোট 11 বার

ভবঘুরে পাগলী জোসনা, সন্তান ও সংসার কি তা বোঝে না সে। এমনকি কেউই জানেনা তার পরিচয়। অথচ মাস খানেক আগেই পাগলীটি কন্যা সন্তানের মা হয়েছে। ফুটফুটে কন্যাটির নাম রাখা হয়েছে ফাতেমা।

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার দেবীপুর গ্রামে সদ্যজাত সন্তান ও তার মা পাগলীকে নিয়ে দিশেহারা হয়ে পেড়েছে কৃষক মহাসীন আলী ও তার পরিবারের লোকজন। একদিকে সদ্যজাত শিশুটির খাবারে অপ্রতুলতা, অন্যদিকে পাগলীর অত্যাচার। সবমিলিয়ে অথৈয় সমুদ্রে মাঝে ভাসছে গোটা পরিবার।

সন্তান প্রসবের পরই দূর ধুরান্ত থেকে তাকে দেখতে এসেছে অনেকেই। কিন্তু আগত লোকজন কেউ চিনতে ও জানাতে পারেনি পাগলীটির পরিচয়। সে সময় অনেকেই সামান্য টাকা পয়সা দিয়ে যাই অসহায় পরিবারটিকে। আবারও অনেকেই সন্তানটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য আগ্রহী হয়। কিন্তু সে সময় গৃহকর্তা মহাসীন আলী ও তার পরিবারের লোকজন সন্তানটিকে দত্তক দিতে চান নি। তারা ভেবেছিলেন হয়তো পারগলীটির পরিচয় পাওয়া যাবে। কিন্তু না গেল প্রায় এক মাস যাবৎ পাগলীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি।

আরও ফড়ুন: মেহেরপুর জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আমজাদ গ্রেপ্তার...

এদিকে মহাসীন আলীর পরিবারের পক্ষে পাগলী ও তার সন্তানের খাবারের ব্যবস্থা করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। পরিবারের লোকজন জানান, মাস খানেক আগে রাস্তায় ঘুরছিলো পাগলিটি। ছেলে মেয়েরা উত্তপ্ত করছিলো তাকে। বিষয়টি দেখে পাগলীকে মহাসীন আলীর পরিবারের লোকজন তার বাড়িতে নিয়ে আসেন।


শারিরিক গঠন দেখে সন্তান সম্ভবা বুঝতে পেরে স্থানীয় ক্লিনিকে নিয়ে যান পাগলিটিতে। সেখানে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর অন্তস্বত্বা বিষয়টি নিশ্চিত হয়। গত (১২ অক্টেবর) ওই পাগলীটির ফুটফেটে সন্তান জন্ম হয়।


একদিকে যেমন আর্থিক সংকট অন্য দিকে মায়া, এখন ভবঘুরে পাগলী ও তার কন্যা সন্তানকে নিয়ে তাই মহাসীন আলীর চোখে যেন অশ্রু সিদ্ধ।

মহাসীন আলীর পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে জানানো হলে বামুন্দী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ওবাইদুর রহমান কমল, উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করেন।

আরও পড়ুন: গাজীপুরে আবারও যাত্রীবাহী ২ বাসে আগুন...

ইতোমধ্যেই উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার আরশাদ আলী ঘটনাস্থান পরিদর্শন করেন ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়ে বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রসাশক মহাদয়কে ঘটনাটি সম্পর্কে জানানো হয়। সিন্ধান্ত অনুযায়ী পাগলীকে আদালতের মাধ্যমে ভবঘুরে পুনর্বাসন কেন্দ্রে পেরণ করা হবে।

আদালতের মাধ্যমে ভবঘুরে পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাগলী ও কন্যা সন্তানটিতে পাঠিয়ে দিলে হয়তো মহাসীন আলী পরিবার আথিক দিক থেকে কিছুটা রেহায় পাবে তবে ফাতেমার মায়া কি কাটিয়ে উঠতে পারবে কৃষক মহাসীন আলী?

তরিকুল ইসলাম