এডিসি হারুনের সঙ্গে রংপুরে বদলি সানজিদাও, ঘটনার দায় চাপালেন স্বামীর উপর

 অনলাইন ডেস্ক    ১৩ সেপ্টেম্বার, ২০২৩ ১৪:৪৩:০০নিউজটি দেখা হয়েছে মোট 9 বার

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় দুই নেতাকে নির্যাতন এবং রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হক মামুনের মধ্যকার ঘটনায় বরখাস্ত হন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন-আর-রশিদ।

ঘটনার সূত্রপাত যাকে কেন্দ্র করে তিনি হচ্ছেন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) সানজিদা আফরিন। সানজিদা আফরিন (এডিসি) অবশেষে এ ঘটনায় নিজ স্বামীকেই দোষারোপ করেছেন।

ঘটনাটি ঘটেছিলো ৯ সেপ্টেম্বর শনিবার দিবাগত রাতে।

ঘটনার সূত্রপাত ও বর্ণনায় ছাত্রলীগ নেতারা জানিয়েছেন, এডিসি হারুন শনিবার রাতে আরেক পুলিশ কর্মকর্তার সানজিদা আফরিনের (এডিসি) সঙ্গে বারডেম হাসপাতালে আড্ডা দিচ্ছিলেন। ওই সময় এডিসি সানজিদা আফরিনের স্বামী রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক মামুন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান।

এক পর্যায়ে তার সঙ্গে এডিসি হারুনের বাক-বিতণ্ডা হয়। সেটি হাতাহাতিতে রূপ নেয়। এরই জের ধরে পুলিশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাবির শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিমকে ডেকে নিয়ে তাদেরকে থানায় নির্মম নির্যাতন করা করেন।

উক্ত ঘটনার কারণে ১০ সেপ্টেম্বর দুপুরে পুলিশের পক্ষ থেকে এডিসি হারুনকে রমনা বিভাগ থেকে সরিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) দাঙ্গা দমন বা পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছিলো।

আরও পড়ুন: শেখ রেহানার ৬৯তম জন্মদিন আজ...

একই দিন সন্ধ্যায় তাকে আবার আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এপিবিএন) বদলি করা হয় বলেও পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিলো।

আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নেও ঠাই হয়নি এই পুলিশ কর্মকর্তার। এর পর দিনই ১১ সেপ্টেম্বর বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এক প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এডিসি হারুনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

সবশেষ তাকে পুলিশের রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়েছে।

ঘটনা এখানেও শেষ নয়, শুধু এডিসি হারুনকে নয়, সানজিদা আফরিনকেও রংপুর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে সচ্ছ জলকে ঘোলাটে করে এডিসি সানজিদা আফরিন বলেন, ‘আমার স্বামীসহ আরও কয়েকজন প্রথমে এডিসি হারুন স্যারকে মারধর করেন।’

সানজিদার দাবি, ‘‘শারীরিক সমস্যার কারণে স্যারকে ফোন করে বলেছিলাম আমার জন্য একজন চিকিৎসকের আ্যাপয়েন্টমেন্ট ম্যানেজ করে দেয়ার জন্য। আ্যাপয়েন্টমেন্টের পর চিকিৎসক মিটিংয়ে থাকার কারণে আমি স্যারকে ফোন করি”।

স্যার বলেন “তুমি অপেক্ষা করো আমি দেখি এসে কথা বলে কাউকে ম্যানেজ করা যায় কি না।’ এরপর স্যার হাসপাতালে এসে একজন চিকিৎসকের অ্যাপয়েন্টমেন্ট ম্যানেজ করেন”।

সানজিদা আরও বলেন, ‘‘ডাক্তার আমাকে কিছু টেস্ট দেন। আমি সেগুলোর জন্য স্যাম্পল দিচ্ছি। ঠিক সেই সময়ই আমার স্বামীসহ কয়েকজন ছেলে যাদেরকে আমি চিনতাম না তারা স্যারকে মেরে চেনেহিঁচড়ে রুমের ভেতরে নিয়ে যায়”।

আরও পড়ুন: ডিসির ভোট চাওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী...

যখন এ ঘটনা ঘটে তখন আমি ইটিটি রুমে ছিলাম। ইটিটি রুম থেকে আমি প্রথম ¬-শুনতে পাই, স্যার খুব জোরে বলছেন যে, ‘ভাই আপনি আমার গায়ে কেন হাত দিচ্ছেন। আপনিতো আমার গায়ে হাত দিতে পারেন না’।

‘আমি প্রথমে বিষয়টি বুঝতে পারিনি। পরে আমি আমার হাজব্যান্ডের গলার আওয়াজও শুনতে পাই। তখন আমার হাজব্যান্ড সহ কয়েকজন ছেলে যাদেরকে আমি চিনতাম না তারা স্যারকে মেরে টেনেহিঁচড়ে রুমের ভেতরে নিয়ে যায়’।

এর মধ্যে রুমে হাসপাতালের সিকিউরিটিরা চলে আসে। প্রায় ১০-১৫ মিনিট পর থানার ফোর্স এসে তাদেরকে নিয়ে যায়।

সানজিদা আরো বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় আমি সাইবার বুলিংয়ের শিকার। অনেকে নোংরা মানসিকতার পরিচয় দিচ্ছে। একটি ছবি ছড়িয়ে দিয়ে হারুন স্যারের সঙ্গে আমার বিয়ের কল্পকাহিনী প্রচার করছে। এবার আমি সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছি।’

অনলাইন ডেস্ক