মালয়েশিয়াতে বন্দী জীবন কাটাচ্ছেন মেহেরপুরের তিন শতাধিক যুবক

 তরিকুল ইসলাম    ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ১৮:৪৪:০০নিউজটি দেখা হয়েছে মোট 43 বার

ঋণের কিস্তি তুলে, সুদের উপরে টাকা নিয়ে এবং জমি বন্ধক রেখে সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন মেহেরপুরের তিন উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের তিন শতাধিক যুবক। সহায় সম্বল বিক্রি করে দালালের হাতে তুলে দিয়েছিলেন ৫-৭ লাখ টাকা।

৩-৬ মাস আগে মালোশিয়ায় গেলেও আকামা বা কাজের অনুমতিপত্র না পাওয়ায় কর্মহীনভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা। দালাল চক্রটি অন্যথায় বিক্রি করায় কাজ না পেয়ে ভুগছে খাবার পানি সংকটে।

অন্যদিকে ঋণের টাকা পরিশোধ না করতে পেরে প্রতিনিয়তই বিভিন্ন এনজিওর লোকেরা বাড়িতে এসে ভুক্তভোগির পরিবারদের দিচ্ছে চাপ।

পাশাপাশি ভুক্তভোগীদের দেয়া হচ্ছে প্রাণনাশের হুমকি, এই সকল ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।

আরও পড়ুন: ৬ দিনের নতুন কর্মসূচি দিলো বিএনপি...

একটু সুখের আশায় পরিবারের সদস্যদের কথা চিন্তা করে ধার দেনা করে ছেলেকে পাঠিয়েছেন মালয়শিয়াতে। এখন ঋণের টাকার জন্য প্রতিনিয়তই ভুক্তভোগীদের চাপ দিচ্ছেন পাওনাদারেরা।

অন্যদিকে মালয়েশিয়ায় থাকা ছেলে ও পরিবারের সদস্যরা মানবতার জীবনযাপন করায় দুখের ছায়া নেমে এসেছে ভুক্তভোগীদের পরিবারগুলোতে।


মালয়েশিয়ায় থাকা ভুক্তভোগীরা জানান, স্থানীয় গাংনী উপজেলার সাহেবনগর গ্রামের কেএনএফএইচ বালিকা বিদ্যালয় লাইব্রেরিয়ান শিক্ষক মাজেদ মাস্টার, হাড়াভাঙ্গা গ্রামের এইচবি মাধ্যমিক বিদ্যালের প্রধান শিক্ষক রাজু মাস্টার, কাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য শরিফুল ইসলাম ওরফে ন্যাড়া, মুসা করিম, বালিয়াঘাট গ্রামের আনিসুল হক মাস্টারের ছেলে শোভন এর মাধ্যমে ঢাকায় নাভিরা ও মুসা কলি এন্টারপ্রাইজ এজেন্সির মাধ্যমে টাকা দিয়ে ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়ে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয়। গেল ৩-৬ মাসেও দালাল চক্রের সদস্যরা কোন কাজ দিতে পারেনি। দালাল চক্রের পক্ষ থেকে বিভিন্নভাবে দেওয়া হচ্ছে প্রাণনাশের হুমকি।

অনেকেই স্বামী-সন্তান, পরিবার ছেড়ে একটু সুখের আশায় পাড়ী জমায় প্রবাসে। অথচ দালালদের খপ্পরে পড়ে আজকে পরিবারসহ তারা সর্বশান্ত। এই সকল দালাল চক্রের সদস্যদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবি করেন এলাকাবাসীরা।

এলাকার অনেক যুবক দালাল চক্করের খপ্পরে পড়ে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন। অনেক খরচ করে গেলেও তিন মাস যাবত কাজ না পেয়ে মানবতার জীবনযাপন করছেন। মাজেদ মাস্টার ফোন দিয়ে জানিয়েছেন এক থেকে দেড়শ জনের ভিসার কাজ হয়ে গেছে তারা দ্রুত সময়ের কাজ পাবে বলে জানান স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক আহম্মেদ

ঘটনাকে কেন্দ্র করে মেহেরপুর জেলা পুলিশ সুপার এস এম নাজমুল হক জানান, প্রাইমারি ইনভেস্টিগেশন শুরু করেছি, এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে চক্র সদস্যদের বাড়িতে যোগাযোগ করতে গিয়ে দেখা যায় বাড়ি তালাবদ্ধ। মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে গেলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

তরিকুল ইসলাম