বিশ্বের দামি কফিগুলোর মধ্যে রয়েছে কিছু বিশেষ ধরনের কফি, যা প্রাণীদের মল থেকে তৈরি হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হলো কোপি লুয়াক। পৃথিবীর সবচেয়ে দামী কফি ইন্দোনেশিয়ায় তৈরি হওয়া পৃথিবীর সবচেয়ে দামী এই কফিটির নাম, ‘কোপি লুয়াক’।
এক কাপ ‘কপি লুয়াক’ এর দাম সর্বনিম্ন ৩৫ ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় উনত্রিশশো টাকা) থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০০ ডলার (৮ হাজার ৮শ’ টাকা) পর্যন্ত গুনতে হতে পারে। কোপি একটা ইন্দোনেশিয়ান শব্দ। ইন্দোনেশিয়ানরা কফিকে কোপি বলে। আর পাম সিবেট বা পাম বিড়াল ইন্দোনেশিয়ায় লুয়াক নামে পরিচিত। কোপি লুয়াককে ‘ক্যাট পুপ কফি’ও বলা হয়।
সিভেটস, এশিয়া পাম সিভেটস আসলে বিড়াল নয়। এগুলো ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন এবং ভিয়েতনামের মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সিভেটস গোত্রের প্রাণী। বাংলায় যার নাম গন্ধগোকুল। কোপি লুয়াক সংগ্রহ করতে হয় এই পাম সিভেট প্রাণীটির মল থেকে! এ কফি যে পদ্ধতিতে বানানো হয়, তা জানলে অবাক হবেন আপনি।
এমনকি যদি একটু খুঁতখুঁতে স্বভাবের হয়ে থাকেন, তাহলে কফিটা আপনার হয়তো খেতেই ইচ্ছে করবে না।
চাষ করা কফির ফল খেতে দেয়া হয় পাম সিবেটকে। তারা বেছে বেছে সবচেয়ে ভালো কফি ফলগুলোকে গিলে খেয়ে নেয়। কিন্তু বীজসহ কফি ফলের পুরোটা তারা হজম করতে পারে না। কফি ফলের মাংসল অংশ হজম হয়ে গেলেও বীজগুলো আস্তই থেকে যায়। এর পরিপাক নালীর মধ্যে কফির বীজগুলোর গাঁজন হয়। প্রটিএজ নামক এক ধরনের পাচক রস কফিশুটির মধ্যে প্রবেশ করে ক্ষুদ্রতর পেপটাইড এবং অন্যান্য মুক্ত অ্যামিনো অ্যাসিড তৈরি করে। এতে কফির বীজে যোগ হয় ক্যারামেলের ফ্লেভার বা এক প্রকারের সুগন্ধ। এই কারণেই লুয়াক কফির স্বাদ বেড়ে যায়।
পরে পাম সিবেট মলত্যাগ করলে তা থেকে আস্ত বীজগুলো সংগ্রহ করেন কফিশ্রমিকেরা। আর সে বীজগুলো পরিষ্কার করেই তৈরি করা হয় সবচেয়ে দামি কফি। তবে এই পরিষ্কার করার কাজটিও কয়েকটি ধাপে করা হয়। প্রথমেই ভালো করে ধুয়ে নেয়া হয় কফির বীজগুলো। তারপরে একটি উচ্চ তাপমাত্রায় কফিগুলো ভেজে নেয়া হয়। এছাড়াও কফিবীজের উপরের একটা লেয়ার তুলে ফেলার ব্যবস্থা নেয়া হয়। তাই এই প্রক্রিয়াগুলো নিশ্চিত করে যে কোপি লুয়াক পান করার জন্য শতভাগ নিরাপদ। এই কফি মৃদু, মসৃণ এবং কম তিক্ততার জন্য বিখ্যাত।
অনলাইন ডেস্ক