অতিপ্রিয় খেজুরের রস এখন বিলুপ্তির পথে

 ইমন মিয়া    ২০ নভেম্বার, ২০২৩ ১৪:৫৮:০০নিউজটি দেখা হয়েছে মোট 53 বার

শীতের সময় দিনে গরম সন্ধ্যা হলেই বোঝা যায় প্রচুর ঠান্ডা সকালে শিশির ভেজার পথ যা শীতের আগমনের বার্তা জানান দিচ্ছে। হালকা শীত শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খেজুর গাছ কাটার প্রতিযোগিতা পড়ে যায় গাছিদের মধ্যে। খেজুর গাছ থেকে সুস্বাদু রস সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত হন গাছিরা।

রস সংগ্রহকারী গাছিদের প্রাণ ভরে উঠে আনন্দে। যদিও আগের মতো খেজুর গাছ না থাকায় এখন আর সে উৎস নেই চাষীদের মনে। অবহেলায় পড়ে থাকা খেজুর গাছের কদর বেড়ে উঠেছে।

শীতের সকালে গ্রামের হাটে হাটে খেজুরের রস ভরা হাড়ি এখন আর চোখে পড়ে না সচারচর, পাওয়া যায় না খেজুর রসে তৈরী গুড়ের প্রকৃতিগত মনমাতানো সেই ঘ্রান। সাত সকালে কুয়াশার চাদরে ঢাকা খেজুরের রস নিয়ে গাছিরা বাড়ি বাড়ি ডাক দিতেন এসব ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে দিন দিন এখন এসব বিলুপ্তের পথে।


চামরুল ইউনিয়নের আটগ্রামের এম এ বাতেন খান বলেন, খেজুরের গাছ আগের তুলনায় অনেক সংখ্যা কমে গেছে। এক সময় গ্রামে খেজুরে রস ছিল ভরপুর। কিন্তু খেজুরের গাছ কমে যাওয়াতে তাদের চাহিদাও কমে গেছে। আগে এই কাজ করে ভালোভাবে সংসার চালাতেন পেশাজীবিরা। এখন খেজুরে রস খাবো সে চিন্তা মাথায় আসে না। কারণ খেজুরের গাছ তেমন আর দেখা যায় না। ফলে শীতকালের প্রকৃতিগত সুস্বাদু খেজুরের রস আগের মত পাওয়া যায় না।

আরও পড়ুন: সকালে কী খেলে সারাদিন চাঙা থাকা যায়?...

তবে খেজুরের রসের পাটালি ও গুড়েরও বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে বাংলার ঘরে ঘরে। তবুও যে কয়টা গাছ আছে সে কয়েকটা গাছের পরিচর্যা করলে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ও প্রকৃতি সৌন্দর্য ধরে রাখা যেত। গাছের পরিচর্যা না থাকাতে রাস্তা ঘাটের গ্রামগঞ্জের বিভিন্ন জায়গার খেজুর গাছ মারা যাচ্ছে।


রাকিব খান জানান, খেজুরের গুড় দিয়ে তৈরি করা নানা রকমের দুধচিতই, পুলি-পায়েস পিঠার খাওয়ার কথা এখনো ভুলতে পারি না। এলাকায় খেজুর রস স্বপ্নের মতো বলা যায়। চড়া দাম দিয়েও রস ও গুড় পাওয়া যায় না।

উপজেলার গাছিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, একটি খেজুর গাছর রস দেয়ার মতো উপযুক্ত হতে ১১ থেকে ১৪ বছর সময় লাগে। একটি পূর্ণ বয়স্ক গাছ থেকে দৈনিক ৭-১০ লিটার রস পাওয়া যায়। তবে খেজুর রসের পরিমাণ গাছ ছিলার কৌশল ও যত্নের উপর অনেকটা নির্ভর করে।

ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চাইলে আমাদের সবার উচিত বেশি করে খেজুর গাছ লাগানো তা পরিচর্যা করে বড় করা। পাশাপাশি খেজুর গাছ রোপন করা দরকার তাহলে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে যেমন রক্ষা করবে ঠিক পরিবেশের ভারসাম্যও রক্ষা হবে।

ইমন মিয়া