কবি সুফিয়া কামালের ১১২তম জন্মবার্ষিকী আজ

 অনলাইন ডেস্ক    ২০ জুন, ২০২৩ ১৭:৪৭:০০নিউজটি দেখা হয়েছে মোট 7 বার

কবি বেগম সুফিয়া কামালের আজকে ১১২ তম জন্মবার্ষিকী । জননী সাহসিকা হিসেবে খ্যাত এ কবি ১৯১১ সালের ২০ জুন জন্মগ্রহণ করেন।

আজীবন মুক্তবুদ্ধির চর্চার পাশাপাশি সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে গেছেন সুফিয়া কামাল। তিনি সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি গণতান্ত্রিক আন্দোলন, সংগ্রামে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। ১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকায় মারা যান এ কবি।

১৯১১ খ্রিস্টাব্দের ২০ জুন তৎকালীন পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের বাকেরগঞ্জ জেলার শায়েস্তাবাদে মামার বাড়ি রাহাত মঞ্জিলে জন্মগ্রহণ করেন বেগম সুফিয়া কামাল।

তিনি ছিলেন একটি বাঙালি মুসলমান জমিদার খান্দানের মেয়ে ।

সাত বছর থাকতে তার বাবা সৈয়দ আব্দুল বারী আইন পেশা এবং ঘরবাড়ি ছেড়ে সন্ন্যাসী হয়ে যান।

তাই সুফিয়া তার মা সৈয়দা সাবেরা বেগমের সাথে নানার বাড়িতে চলে আসেন। আর সেখানেই থেকে বড় হন তিনি।

সুফিয়ার নানা খান বাহাদুর নবাব সৈয়দ মীর মোয়াজ্জেম হোসেন ছিলেন একজন জমিদার ও ম্যাজিস্টেট।

সুফিয়া কামালের জন্মদিন উপলক্ষে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পথিকৃৎ বাণীতে নারী জাগরণের অন্যতম কবি সুফিয়া কামালের জন্মবার্ষিকীতে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও কবি সুফিয়া কামালের ১১২তম জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষে ‘সুফিয়া কামাল ও তরুণ প্রজন্ম’ বিষয়ক স্মারক সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান আজ মঙ্গলবার (২০ জুন) বিকেল ৩টায় বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে।

আরো পড়ুন: রাতের খাবার দেরিতে খেলে কী হয়?...

উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। স্মারক বক্তব্য প্রদান করবেন আজকের পত্রিকার ডেপুটি এডিটর জাহিদ রেজা নূর।

চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেনকে এ বছর সুফিয়া কামাল সম্মাননা প্রদান করবেন।

বাংলার প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে সুফিয়া কামালের ছিল দৃপ্ত পদচারণা। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর পরিবারসহ সুফিয়া কামাল কলকাতা থেকে ঢাকায় চলে আসেন।

ভাষা আন্দোলনে বেগম সুফিয়া কামালের সক্রিয়ভাবে অংশ যোগ দেন এবং এই আন্দোলনে নারীদের উদ্বুদ্ধ করেন।

তিনি ১৯৫৬ সালে শিশু সংগঠন কচিকাঁচার মেলা প্রতিষ্ঠা করেন।

১৯৬১ সালে রবীন্দ্র সংগীত নিষিদ্ধ করেন পাকিস্তান সরকার, তার প্রতিবাদে সংগঠিত আন্দোলন শুরু করেন সুফিয়া কামাল এবং ছায়ানটের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করেন। স্বাধীন বাংলাদেশে নারী জাগরণ ও নারীদের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামেও তিনি উজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেন।

সাঁঝের মায়া, মন ও জীবন, শান্তি ও প্রার্থনা, উদাত্ত পৃথিবী ইত্যাদি সুফিয়া কামালের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। এছাড়া সোভিয়েতের দিনগুলি এবং একাত্তরের ডায়েরি তার অন্যতম ভ্রমণ ও স্মৃতিগ্রন্থ। সুফিয়া কামাল দেশ-বিদেশের ৫০টিরও বেশি পুরস্কার লাভ করেছেন।

সুফিয়া কামাল ১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। তাকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়। বাংলাদেশি নারীদের মধ্যে তিনিই প্রথম এই সম্মান লাভ করেন। প্রতি বছর এই দিনটিতে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্মরণ করা হয়।

অনলাইন ডেস্ক