মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে মোবারক ও অফিস সহায়ক তোফাজ্জেল হোসেনকে লাঞ্চিত করার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার রাতে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে মোবারক বাদী হয়ে গাংনী থানায় কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনের বিরেুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।

মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে লাঞ্ছিতের বিষয়টি ছিল গাংনীর আলোচিত ঘটনা। র‌্যাব,পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে আসলে গাংনী উপজেলা পরিষদ চত্বর থমথমে অবস্থা বিরাজ করে।

গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বানী ইসরাইল বলেন, শিক্ষা অফিসার হোসনে মোবারক বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। তবে তবে গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে।

গাংনী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে মোবারক জানান, আদালতে দায়েরকৃত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ (বিচারক) মো. তহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পিটিশন নং-১০৮/২০২৪ মামলার নিস্পত্তি করত আদেশ দেয়া হয়। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ,২০০০ এর ২৭ (১ক)(ক)ধারা অনুযায়ী এই আদেশ ৭ কর্মদিবসের মধ্যে একটি লিখিত অনুসন্ধান প্রতিবেদন এবং উক্ত প্রতিবদনের সমর্থন সাক্ষীদর সাক্ষ্য গ্রহনের কাগজ পত্র সহ প্রাসঙ্গিক তথ্য প্রমান দাখিলের নির্দেশনা দেয়া হয়। সে মোতাবেক গত সোমবার বাদী ও বিবাদীদর শুনানীত আহবান করা হয়। মামলার বাদী সীমা খাতুন ও বিবাদী তুহিন আলীকে নিয়ে উভয়পক্ষের স্বাক্ষীদের নিয়ে শুনানী করছিলেন। এমতাবস্থায় একদল দুর্বত্ত শিক্ষা অফিসের সামনে বিশৃঙ্খলা শুরু করে। এসময় শিক্ষা অফিসের অফিস সহায়ক তোফাজ্জেল শান্ত থাকার আহবান জানালে বাদীপক্ষের লাকজনের উপর চড়াও হয় এবং কিল ঘুষি মারতে থাকে। বাইরে হট্টগাল ও গালিগালাজ শুনতে পেয়ে আমি অফিসের গেটের সামনে আসলে একদল উশৃঙ্খলা দুর্বৃত্ত আমার উপর চড়াও হয় এবং তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এসময় গালিগালাজ করার পর শার্টের কলার ধরে টানাহেচড়া করে লাঞ্ছিত করে।

আরো পড়ুন:ভেঙ্গে পড়েছে ভুমিসেবা ইচ্ছেমত নামজারি ও অফিস করেন গাংনীর এসিল্যান্ড

ঘটনাকে কেন্দ্র করে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে মোরবককে মারধরের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছানোর পর নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করি। এরপরও অঅমান সামনেই আবারো তাকে লাঞ্চিত করে। বিষয়টি জানতে পেরে জেলা প্রশাসককে বিষয়টি অবহিত করি। পরবর্তীতে ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে কঠোর ভুমিকা রাখেন জেলা প্রশাসক স্যার।

তিনি আরও বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুর্বৃত্তদের সনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। তাৎক্ষনিকভাব গাংনী থানার ওসি বানী ইসরাইল,মেহেরপুরে দায়িত্ব প্রাপ্ত সেনাবাহিনীদল, র‌্যাব-১২ এর ক্যাম্প ইনচার্জ আশরাফুল্লাহক বিষয়টি অবহিত করা হয়। ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আটক এবং আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনিক তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন বলেও উপস্থিত সাংবাদিকদর জানিয়েছেন।

আরো পড়ুন:নরসিংদীর মনোহরদীতে স্কুল শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা!

উল্লখ্য, গাংনী উপজেলার হাড়িয়াদহ গ্রামের সোহরাব আলীর মেয়ে সীমা খাতুনের সাথে একই উপজলার ঝোরপাড়া গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে তুহিন আলীর প্রেমর সম্পর্ক নিয়ে ১ বছর আগে নিকাহ রেজিষ্টারের কার্যালয়ে বিয়ে হয় বলে দাবি করা হয়। পরবর্তীত তুহিন আলী বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে স্ত্রী সীমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এনিয়ে সীমা খাতুন আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলা দ্রত নিষ্পত্তি করতে ইতোপূর্বে গাংনী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। মামলা নিষ্পত্তি করতে তিনি স্বামী তুহিনের ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। বাদি সীমা খাতুন নারাজি দিলে পরবর্তীত উক্ত মামলা পুনঃ প্রতিবেদন করে নিস্পত্তি করতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। সেই আলোকে তিনি উভয়পক্ষর শুনানী করছিলেন।

তরিকুল ইসলাম