মেহেরপুরের গাংনীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের উপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা সন্ত্রাস দমন আইনে মামলায় মেহেরপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সদ্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ খালেক ও প্রাক্তন উপজেলা চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক শফিকুল আলমকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যে রাতে তাদের নিজবাড়ি থেকে গ্রেফতার করে র্যাব ১২ গাংনী ক্যাম্প।
সিপিসি-৩, মেহেরপুর, র্যাব-১২ কোম্পানী কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফউল্লাহ পিপিএম জানান, বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের ভাবমূর্তী ক্ষুন্ন করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি এবং ধ্বংসাত্বক কার্যকলাপ করার জন্য আসামীরা আওয়ামীলীগ সমর্থিত লোকজন নিয়ে নিজ নিজ বাসায় অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করছে এবং আইন শৃঙ্খলা অবনতি ঘটানোর পরিকল্পনা করছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের নিজনিজ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতারকরা হয়। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃতদের গাংনী থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বনী ইসরাইল বলেন, গাংনী পৌরসভার চৌগাছা গ্রামের জুলফিকার আলীর ছেলে রেজানুল হক ইমন বাদী হয়ে ধারা ২০০৯ সাল (সংশোধনী/২০১২) এর সন্ত্রাস বিরোধী আইনের ৬(২)/৭(৫)/৭(৬)(ক)/৭(৬)(খ)/১০/১১/২/১৩ ধারায় বিজ্ঞ “সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতে” ৩৭ জনের নামে মামলা, অজ্ঞাত আরো ১০০ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।
গাংনী থানার মামলা নং-১১, তারিখ-২০/০৮/২০২৪ ইং। মামলায় এম এ খালেক এজাহার নামীয় ও শফিকুল আলমকে অজ্ঞাত আসামী হিসেবে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে গাংনী বাসস্ট্যান্ড এলাকার তোতা মিয়ার ছেলে ছাত্রলীগ কর্মী তন্ময়। মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন, গাংনী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কসবা গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে বিপ্লব হোসেন (৩০), সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শিশিরপাড়া গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে জীবন আকবর (৩০), গাংনী সরকারি ডিগ্রী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ধর্মচাকী গ্রামের মৃত ইসমাইলের ছেলে শাহিনুজ্জামান (২৫), চৌগাছা গ্রামের হান্নানের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা পিন্টু (২৮), গাংনী মাদ্রাসাপাড়ার খোকন দেওয়ানের ছেলে রেজাউল হক (২৫), গাংনী পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আনারুল ইসলাম বাবু (৩৮), চৌগাছা গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে যুবলীগ নেতা মিলন (৪০), জালশুকা গ্রামের জমসেদ আলীর ছেলে ছাত্রলীগ নেতা ওবায়দুল (২৫), চৌগাছা গ্রামের মৃত আজিমের ছেলে রকিব(৩৮), থানাপাড়া এলাকার ইব্রাহিম জোয়ার্দারের ছেলে হাবিবুর(২৮), শিশিরপাড়া গ্রামের খলিলের ছেলে রমজান আলী (৪৫), মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে বান্টু (৫০), গাংনী বাজারপাড়া এলাকার মৃত মোজাহার আলীর ছেলে মেহেরপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ খালেক (৫৭), মৃত নুর হকের ছেলে গাংনী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন, গাংনী পৌরসভার মেয়র আহম্মেদ আলী, মটমুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল আহমেদ, ষোলটাকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার পাশা, রাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম সাকলায়েন ছেপু, বামন্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওবায়দুর রহমান কমল, বাজারপাড়ার অনিক (২২), শিমুলতলা গ্রামের হারান মন্ডলের ছেলে রাশি (৪০), জোড়পুকুর গ্রামের ফড়ং এর ছেলে ইমারুল (৪০), খোকার ছেলে ফয়সাল (৪০), ময়নাল হকের ছেলে খোকন (৪৫), হাবিবুর রহমানের ছেলে হাসান (৩৮), গাংনী পৌরসভার সাবেক মেয়র আশরাফুল ইসলাম (৫০), গাংনী বাজারপাড়া এলাকার হাসেম ফকিরের ছেলে মনি (৪০), হাড়িয়াদহ গ্রামের ইয়ার আলীর ছেলে ও রাইপুর ইউনিয়নের সদস্য (মেম্বর) রাজু আহমেদ (৪০), গাংনী উত্তরপাড়া এলাকার সাবেক ছাত্রলীগের নেতা ও এমপি মকবুল হোসেনের পিএস শাহিদুজ্জামান শিপু (৪০), নওপাড়া গ্রামের কছিমদ্দীনের ছেলে ইয়ারুল ইসলাম (৫০), মুকুল হোসেন (৪৫), গাংনী র্যাব ক্যাম্পপাড়া এলাকার জালাল উদ্দীনের ছেলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জুবায়ের হোসেন উজ্জল (৪০), চৌগাছা গ্রামের মৃত জুলহাসের ছেলে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মজিরুল ইসলাম মিয়া (৫৫), মেহেরপুর ভূমি অফিসপাড়া এলাকার খবির উদ্দীনের ছেলে তুফান (৫২) সদর উপজেলার বুঁড়িপোতা গ্রামের মো: মামুন (৩৮) ও মো: সুমন (৩৫)।
উল্লেখ্য : গত ৩০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ঢাকায় আন্দোলন চলাকালীন সময়ে নিহত ও আহত হওয়ার ঘটনায় উপজেলা শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্বলন করতে গেলে আসামিরা বাদী সহ তাদের সহযোগিদের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ করা হয়।
তরিকুল ইসলাম