কোন ফসল চাষ করেই স্বস্তিতে নেই মেহেরপুরের চাষির। ফসল চাষ করতে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠছে কিন্তু কাঙ্খিত ফলাফল পাচ্ছে না। একদিকে যেমন তেলের দাম,মজুরি খরচ,সারের দাম,কীটনাশকের দাম বেশি অন্য দিকেআমনে হানা দিয়েছে মাজরা পোকা ও গোড়া পচা রোগ।
এসব নিয়েই কৃষকের ভোগান্তির শেষ নেই। এতে কপালে হাত উঠেছে কৃষকের।আমনে গোড়াপচা রোগ ও মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা দেওয়ায় কৃষকদের স্বপ্ন যেন দুঃস্বপ্ন হতে বসেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বিভিন্ন মাঠের আমনে মাজরা পোকা ও গোড়া পচা রোগ।এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হবে বলে জানান চাষিরা। বিভিন্ন কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে কিন্তু তেমন কোন কাজ হচ্ছে না। যদি আমনের মাজরা পোকা ও গোড়া পচা রোগ দমন না যায় তাহলে আমনের ফলন নিয়ে শঙ্কায় পড়তে হবে কৃষকদের।
জেলার ভরাট মাঠের আমন চাষি মশিউর রহমান বলেন,আমনে মাজরা পোকা ও গোড়া পচা রোগ দেখা দিয়েছে।ধানের শীষ না আসতেই ধানের এমন রোগ দেখা দেয়ায় হতাশ আমরা।বিভিন্ন কীটনাশক প্রয়োগ করেছি পোকার আক্রমণ কিছুটা কমলেও এখনও সম্পূর্ণভাবে সমাধান হয়নি।যদি এই রোগ দূর না করা যায় তবে ধানের ফলন নিয়ে শঙ্কায় পড়তে হবে।
তেরাইল মাঠের আমন চাষি পলাশ আহমেদ বলেন,আমনে গোড়া পচা রোগ ও মাজরা পোকার আক্রমণ নিয়ে খুব ভোগান্তিতে আছি।বর্তমানে আবাদ করা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।আাবাদ সংক্রান্ত সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে। এর মধ্যে আবার গোড়া পচা রোগ ও মাজরা পোকার আক্রমণ। বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক প্রয়োগ করছি কিন্তু তেমন কোন কাজ হচ্ছে না।
বামন্দী মাঠের আমন চাষী আনোয়ার হোসেন বলেন, অনেক আমন চাষির ধান মাজরা পোকা ও গোড়া পচা রোগে ধান আক্রান্ত হয়েছে।অনেকে কীটনাশক প্রয়োগ করছে কিছুটা কমেছে।আমিও ধানে কীটনাশক দিয়েছি।তবে ধানে পরিপূর্ণ পানি পেলে পোকার আক্রমণ কমে যাবে আর ধান বাড়তেও থাকবে।
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়,চলতি মৌসুমে উপজেলায় আমন ধান রোপণ করা রয়েছে ১৪ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে। আমনে মাজরা পোকা ও গোড়া পচা রোগ দেখা দেয়ায় উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে আমন চাষিদের।
গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন জানান,মাজরা পোকার পূর্ণবয়স্ক মথের প্রাদুর্ভাব যখন বেড়ে যায় তখন ধানক্ষেত থেকে ২০০-৩০০ মিটার দূরে আলোক ফাঁদ বসিয়ে মাজরা পোকার মথ সংগ্রহ করে মেরে ফেলা যায়। তাছাড়া ধানের জমিতে ১০০ মিটারের মধ্যে ১০-১৫ টি মরা শীষ অথবা পাঁচটি মরা শীষ পাওয়া গেলে কীটনাশক ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি অথবা এসিমিক্স,ফেনজেট,বেল্ট এক্সপার্ট সহ বিভিন্ন কীটনাশক রয়েছে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। আর কৃষি অফিস থেকে চাষীদের সাথে সার্বিক যোগাযোগ করে সব ধরনের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।
তরিকুল ইসলাম