জবি থেকেই উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে শিক্ষকদের আলোচনা সভা

 অনলাইন ডেস্ক    ৩ সেপ্টেম্বার, ২০২৪ ১১:৩৪:০০নিউজটি দেখা হয়েছে মোট 9 বার

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তিত পরিস্থিতি মোকাবেলা করার যোগ্যতাসম্পন্ন, বিচক্ষণ ও সাহসী উপাচার্য চান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এছাড়া উপাচার্যকে অবশ্যই জবি থেকেই হতে হবে বলে দাবি জানিয়েছেন তারা। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) শিক্ষক সমিতির লাউঞ্জে শিক্ষকদের মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তারা।

জবি থেকে ভিসি নিয়োগের দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকবৃন্দের আয়োজনে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানসহ শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।এসময় তারা নিজেদের সহকর্মীদের মধ্য থেকে ভিসি নিয়োগের দাবিতে অনেকে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। তারা বলেন, অতীতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা উপাচার্য হয়ে এসেছেন, রুটিন দায়িত্ব পালন করেছেন। তখনো নিজের বিশ্ববিদ্যালয় মনে করে কাজ করেন নি। দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ শেষ হতে ৬-৭ বছরের বেশি লাগার কথা নয়।

কিন্তু কাজ কেউ আন্তরিকতার সঙ্গে করেননি। তারা আরো বলেন, এখন দেশের পরিস্থিতি পরিবর্তন হয়েছে। আমরা কথা বলতে পারছি। এখনই দাবি জানানোর উপযুক্ত সময়। আমাদের ক্যাম্পাসের সমস্যা আমাদের শিক্ষকগণই ভালো বুঝতে পারবেন।

তবে অবশ্যই উপাচার্যকে বর্তমান দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তিত পরিস্থিতি মোকাবেলা করার যোগ্যতাসম্পন্ন, বিচক্ষণ ও সাহসী হতে হবে।

ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. বিলাল হোসাইন বলেন, আমরা ১৯ বছর ধরে জবি থেকে ভিসি পাইনি। ফলে আশানুরূপ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, গবেষণা ও অবকাঠামোতে উন্নয়ন হয় নি। আমরা পিছিয়ে আছি।

কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. লায়েক বলেন, আমার প্রধান পয়েন্ট হচ্ছে, এখনই উপযুক্ত সময় আমাদের দাবি তুলে ধরার। সেটা হচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য দিতে হবে। তাকে যোগ্যতাসম্পন্ন হতে হবে। কোনোভাবেই যেন ব্যর্থ না হোন, সেদিকে নজর রাখতে হবে। ব্যর্থ হলে আমাদের দাবি নিয়ে আবার সমালোচনা তৈরি হবে।

ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাসির আহমেদ বলেন, আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য যেমন চাই একই সাথে পরবর্তীতে উপাচার্যকে কাজে সহযোগিতা করতে চাই। কিন্তু আমরা উপাচার্যের লোক হয়ে অপ্রয়োজনে তার পিছে ঘুরা, কিংবা তার হয়ে কাজ করা এসব ট্রেন্ড বন্ধ করতে চাই। আমাদের সকলের কাজ হবে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

এ বিষয়ে ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আব্দুল কাদের বলেন, আমাদের কে দুইটা প্ল্যান রেড়ি রাখতে হবে।প্রথমত আমাদের মধ্য থেকে যদি ভিসি আসে যেই আসুক না কেন আমরা তাকে মেনে নিবো।কিন্তু যদি বাইরে থেকে দিয়ে দেয় আমাদের তাৎক্ষণিক রিয়েকশান কি হবে, আমরা যাতে আন্দোলনে আসতে পারি সে বিষয়ে রেড়ি থাকতে হবে।আমরা তখন যেন প্রত্যেকটা শিক্ষককে পাশে পাই।

এ বিষয়ে সভায় উপস্থিত ইতিহাস বিভাগের প্রফেসর শহিদ কাদের চৌধুরী বলেন,আমরা জবি থেকে ভিসি চাই তার মধ্যে একটি কারণ হলো আমরা অনেক সময় দেখি একজন শিক্ষক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেমন সম্মান টা পাওয়া উচিত আমরা অনেকেই এমনটা পাই নাই।ব্যক্তিগত ভাবে আমি পাই নাই।আমি একবার ভিসি দপ্তরে একটা কাজে গিয়েছিলাম।কিন্তু পরবর্তীতে ভিসি আমাদেরকে একবার ও দেখার প্রয়োজন মনে করেন নি।

তাছাড়া, আমার প্রফেসর হওয়ার ক্ষেত্রে ৫ বার বোর্ড ক্যান্সেল হয়েছে।কিন্তু আমাকে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইনফর্ম করা হতো না। এটা তো উচিত ছিলো। তিনি আরো বলেন,আমাদের মধ্যে থেকে পরবর্তীতে যেই ভিসি হোক না কেন আমরা যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে ভিসির সাথে ভালো সম্পর্ক হোক। কিন্তু আমরা যাতে পরিবর্তীত এই সময়ে ভিসির লাঠিয়াল বাহিনীতে পরিনত না হই।

এ ছাড়া মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. লুৎফুর রহমান, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নূরে আলম আব্দুল্লাহ, মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আকরাম উজ্জামান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ড. মোহাম্মদ রেজাউল হোসাইন, গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মোস্তাক আহমেদ সহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা।

অনলাইন ডেস্ক