পূর্ব ভারতের ওড়িশা রাজ্যে একাধিক ট্রেনের সাথে ধাক্কা লেগে অন্তত ২৬১ জন নিহত হয়েছেন। আরও ৯০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। আহত ব্যাক্তিদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
একটি প্যাসেঞ্জার ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার পর পাশের লাইন দিয়ে যেতে থাকা আরেকটি ট্রেন সেটিকে ধাক্কা দেয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইন্ডিয়ান রেলওয়ে বলেছে, করোমানডেল এক্সপ্রেস আর হাওরা সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে দক্ষিণ ভারত যাওয়ার জনপ্রিয় ট্রেনগুলোর মধ্যে অন্যতম করমণ্ডল এক্সপ্রেস। বহু মানুষ প্রতিদিন ওই ট্রেনে চড়ে দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় যান চিকিৎসা করাতে।
এটি ভারতে গত ৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা।
ট্রেনে থাকা যাত্রীদের কয়েকজনের বক্তব্য, জানা গেছে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার সময় একটি প্যাসেঞ্জার ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার পর পাশের লাইন দিয়ে যেতে থাকা আরেকটি ট্রেন সেটিকে ধাক্কা দেয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। করোমানডেল লাইনচ্যুত কয়েকটি বগি গিয়ে পড়ে পাশের লাইনের ওপর। ডাউন লাইনের ওপর আড়াআড়ি গিয়ে পড়ে করোমানডেল এক্সপ্রেসের কয়েকটি কামরা। ততক্ষণে করোমানডেল এক্সপ্রেস দাঁড়িয়ে পড়েছে।

একটি মালবাহী ট্রেন করোমানডেল এক্সপ্রেসের সামনে চলছিল। কোনোভাবে করোমানডেল এক্সপ্রেস সোজা গিয়ে ধাক্কা মারে সেই মালগাড়ির পেছনে। যাত্রীবাহী এক্সপ্রেসটি মালবাহী ট্রেনের পেছনে ঘণ্টায় ১২৮ কিলোমিটার গতিতে আঘাত করেছিলো। ফলে যাত্রীবাহী ট্রেনটির ইঞ্জিন মালবাহী ট্রেনের বগির উপর উঠেপড়েছিলো। ঠিক ওই সময়ই উল্টো দিক থেকে আসছিল বেঙ্গালুরু থেকে হাওড়াগামী একটি এক্সপ্রেস ট্রেন। যা লাইনের ওপর আড়াআড়িভাবে পড়ে থাকা করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কয়েকটি কামরার ওপর দিয়ে চলে যায়। ডাউন লাইনে পড়ে থাকা করমণ্ডলের বগির সঙ্গে সংঘর্ষে লাইনচ্যুত হয় হাওড়াগামী এক্সপ্রেস ট্রেনের একাধিক বগি। তাখনি ছিটকে পড়েন ট্রেনের ভেতরে থাকা যাত্রীরা।
ভারতীয় রেলকর্মীদের একটি অংশের দাবি, প্রথমে লাইনচ্যুত হয় বেঙ্গালুরু থেকে হাওড়াগামী এক্সপ্রেস ট্রেনটি। হাওড়াগামী ট্রেনের কয়েকটি কামরা আপ লাইনে এসে পড়ে আড়াআড়িভাবে।
দুর্ঘটনার ফলে ট্রেনের যাত্রীরা আটকে পড়েন ট্রেনের কামরার মধ্যেই। সাথে সাথে সাহায্যের জন্য কাউকে না পেয়ে ট্রেনের যাত্রীরাই উদ্ধারকাজ করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় রেলের উদ্ধারকারীদল।
ওড়িশা রাজ্যের মুখ্যসচিব প্রদীপ জেনা দুর্ঘটনার পরপর জানিয়েছিলেন দুর্ঘটনাস্থল বালাসোরে অন্তত ২০০টি বেশি অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়। এছাড়া ১০০জন বেশি অতিরিক্ত ডাক্তার সেখানে সেবায় নিয়োজিত করা হয়েছে।
টর্চ ও মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে শুরু হয় উদ্ধারকাজ।
দর্শনকারীরা দেখতে পান, এখানে ওখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে দেহাংশ, যাত্রীদের জিনিসপত্র, খাবার। সেই সঙ্গে বিভিন্ন বগি থেকে ভেসে আসতে থাকে কান্না, চিৎকারের শব্দ।
দুর্ঘটনা যে এলাকায় হয়েছে সেই এলাকাটি নির্জন। ফলে দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয় মানুষ ছুটে এসে উদ্ধারকাজে নামতে পারে। একটু সময় যেতেই হাজির হতে থাকেন আশপাশের লোকজন। ট্রেনের যাত্রীদের সঙ্গে উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
কিছু ট্রেনের যাত্রাপথও বদলে দেওয়া হয়। বাতিল হওয়া ট্রেনগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পুরীগামী জগন্নাথ এক্সপ্রেস, পুরী এক্সপ্রেস, যশবন্তপুর এক্সপ্রেস, চেন্নাই মেইল। শিয়ালদহ-পুরী দুরন্ত এক্সপ্রেসও বাতিল করা হয়েছে।
হাওড়ার শালিমার স্টেশন থেকে শালিমার-পুরী ধৌলি এক্সপ্রেস ও শালিমার-হায়দরাবাদ ইস্ট কোস্ট এক্সপ্রেস বাতিল করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক



























































































































































































.jpg)








.jpg)




























